নেত্রকোনায় অবস্থান করেও আপনি যদি এ মানুষটি সম্পর্কে না জানেন, তাহলে সত্যিই আপনি অনেক বড় হতভাগা। কারণ, এ মানুষটি যে নেত্রকোনার এক মূল্যবান রত্ন। তিনি অধ্যাপক যতীন সরকার। বাংলা সাহিত্যের অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন লেখক, প্রাবন্ধিক এবং প্রগতিবাদী চিন্তাবিদ। এ মহান মানুষটি ১৯৩৬ সালের আজকের এই দিনে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
.
পরিবারের অভাব-টানাপোড়েনের মধ্যে নিজে উপার্জন করে পড়াশোনা ও সংসারের হাল ধরেছেন এ বরেণ্য লেখক। টিউশনি করে টাকা জমিয়ে কলেজে ভর্তি হন। বিএ পরীক্ষা দিয়েই জীবীকার তাগিদে শুরু করেন শিক্ষকতা। তার বাবা জ্ঞানেন্দ্র সরকার ছিলেন হোমিও চিকিৎসক এবং মা বিমলা বালা সরকার ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৭ সালে যতীন সরকার কানন আইচের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে চিকিৎসক এবং মেয়ে যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে চাকুরিরত আছেন।
১৯৬৪ সালে তিনি ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে লেকচারার পদে যোগদান করেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রগতিশীল রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তিনি উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘকাল ছিলেন ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সদস্য।
.
যতীন সরকার পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন, পাকিস্তানের ভূত দর্শন, সত্য যে কঠিন, গল্পে গল্পে ব্যাকরণে, ভাষা সংস্কৃতি উৎসব নিয়ে ভাবনাচিন্তা, প্রাকৃতজনের জীবনদর্শন, চন্দ্র কুমার দে, কেদারনাথ মজুমদারসহ ৬০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
.
গবেষণা ও প্রবন্ধে ব্যাপক অবদান রাখায় ২০০৮ সালে তিনি লাভ করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। তার আগে বাংলা একাডেমি তাকে “ডাক্তার মোহাম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক” প্রদান করেছিলো। ২০১০ সালে তাকে প্রদান করা হয় স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল যতীন সরকারের জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেন, যা ২০০৬ সালে মুক্তি পায়।
যতীন সরকার, নেত্রকোনা বরেণ্য, খ্যাতিমান, বিখ্যাত, বাংলা সাহিত্য, নেত্রকোনা গুণি ব্যক্তি নেত্রকোনা যতীন সরকার খ্যাতিমান