নেত্রকোণা শহর ক্রমশই পরিণত হচ্ছে খুনের শহরে। প্রতিনিয়ত ইচ্ছাকৃতভাবেই যেন সড়ক দুর্ঘটনার নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। সম্প্রতি শহরের একই জায়গায় কয়েকদিনের ব্যবধানে ঘটে গেল ২টি প্রাণবিনাশী সড়ক দুর্ঘটনা।
প্রাণগুলো চলে গেলো!
আমরাও ফেইসবুকে কয়েকটা পোস্ট করলাম!
একটু আফসোস করলাম!
ব্যাস শেষ!
আবার যে যার মতো রাস্তা পার হবে!
আবারো বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলবে যানবাহন!
এইতো জীবনের নিত্য ঘটনা!
আমরা নিজেরাই বুঝে উঠতে পারিনা আমরা কতটুকু সচেতন। যেভাবে খুশি রাস্তা পার হচ্ছি। গাড়ির ড্রাইভাররা অসম্ভব রকমের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে। গতিসীমা তাদের কোন চিন্তার ব্যাপার নয়। কিন্তু এভাবে মামলা দিয়ে, ফেসবুক পোস্ট করে, মানুষ কে বলে কয়ে ঠিক কতটুকু ফল আমরা পাচ্ছি? আমার তো মনে হয় প্রশাসনের আরেকটু নজর দেওয়া দরকার। নজরটা চোখ খুলে দেওয়া উচিত। চোখ বন্ধ করে চললে এরকম হবেই।
চোখ বন্ধ বলছি তার যথোপযুক্ত কারণ আছে। এতগুলো দুর্ঘটনা ঘটলো এরকম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়! তার প্রতিরোধে ঠিক কি ব্যবস্থা নেওয়া হলো? ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, গণসংযোগ ইত্যাদি। অথচ এগুলো আদৌ কি কাজে লাগলো? শহরের ভেতর কতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? হিসাব আছে আপনাদের? একটারও সামনে কোনো স্পিডব্রেকার আছে? হ্যাঁ, স্পিডব্রেকারই পারে এখন যানবাহনকে গতিসীমার মধ্যে রাখতে। যদিও শহর এখন জ্যামে অচল, তবুও দূর্ঘটনাগুলো অতিরিক্ত গতির কারণেই হচ্ছে। অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে এই স্পিডব্রেকার। অনতিবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর সামনে এবং ঝুঁকিপূর্ণ যত পয়েন্টগুলো (তেরী বাজার, মেছুয়া বাজার, মোক্তারপাড়া ব্রিজের দক্ষিণ পাশে, আনন্দবাজারসহ সকল ঝুকিপূর্ণ স্থান) আছে, সেগুলোতে স্পিডব্রেকার দেওয়া হোক। এই সামান্য উদ্যোগটি হতে পারে প্রাণ ঝরে পড়া রোধের অন্যতম প্রধান মাধ্যম।
.
নেত্রকোণার সকল ঘটনার ভিডিও পেতে এখানে ক্লিক করুন
.
অন্যদিকে দত্ত মার্কেট এরিয়াতে, মার্কেটের বিপরীতপাশে গড়ে উঠেছে অবৈধভাবে সবজি মহল, ফল মহলসহ নানা বাহারি দোকান। এমনিতেই তো রাস্তা ছোট। তারমধ্যে বিকল্প কোন রাস্তা নেই। অটো আর রিক্সার কথা তো বলাই লাগে না। মানুষের চলাচলের রাস্তায় যদি থাকে বাজার আর পাশে যদি থাকে মেইনরোড তাহলে মানুষতো মরবেই দুইদিন পর পর। এই অবৈধ দোকান প্রশাসন সকালে উচ্ছেদ করলে, দুপুরে বসে আবার আগের রূপে। এইরকম নাম দেখানো উচ্ছেদ না করে ফুটপাতের বাজারগুলোর বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষ যদি সত্যিকার অর্থেই আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে চায়, যদি সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে শহরের ভেতর ভারী যানবাহন চলাচলের নীতিমালা করতে চায়, তাহলে অবিলম্বে এই জরুরী পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। আর আমাদেরও সোচ্চার হয়ে এই দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রশাসনকে বাধ্য করতে হবে।
কেবল প্রতিদিন রাত এগারোটা থেকে পর দিন ভোর চারটা পর্যন্ত শহরের ভেতর পণ্যবাহী ট্রাক, বালুবাহী পিকআপ, ইটের ট্রাক, লরি সহ যেকোনো ভারী যান চলাচল করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই শহরের ভেতর ভোর ৫ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত কোনো পিকাপ, ট্রলি, ট্রাক সহ কোনো ভারী যানবাহন মালামালসহ বা খালি অবস্থায় চলতে পারবে না।
.
নেত্রকোণার সকল চাকরির খবর একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন
.
আপাতত এই দুটি নিয়ম মানতে বা বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করতে হবে। প্রশাসন না করলে আমরা নিজেরাই এই সমস্ত ভারী যানবাহনকে বাধ্য করবো উপরের নিয়ম মেনে চলতে। এতে শহরের ভেতর এবং তার আশেপাশে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকখানি কমে আসবে বলে আশা রাখাই যায়।
.
নেত্রকোনা নেত্রকোণা সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু নিহত খুন গাড়ি যাত্রী ড্রাইভার আহত নিহত হত্যা শহর রাস্তা গতি যানবাহন গতিসীমা প্রশাসন ট্রাফিক পুলিশ পৌরসভা স্পিডব্রেকার জ্যাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফুটপাত দোকান যানবাহন ট্রাক পিকআপ লরি ট্রলি Netrokona Road Accident নেত্রকোনা সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু