নেত্রকোনার প্রতিদিনের চিত্র এটি। ট্রেন ছাড়ার কয়েক ঘন্টা আগে স্টেশনে গিয়েও পাওয়া যায় না টিকেট। কিন্তু একটু বেশি টাকা গুণলেই ব্ল্যাক মার্কেট থেকে পাওয়া যাচ্ছে কাঙ্ক্ষিত যেকোনো টিকেট। টিকেট কালোবাজারির এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে খোদ রেলওয়ের বিভিন্ন পদে চাকরি করা কর্মচারীরা।
সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে দেখা যায়, শুধু স্টেশনে নয়, ট্রেনের ভিতরেও টিকেটের কালোবাজারি ব্যবসা চলছে জোরেশোরে। রক্ষকই যেন ভক্ষক হয়ে গিয়েছে। ট্রেনের কর্মচারীরাই দেদারসে চালাচ্ছে এ ব্যবসা। কালোবাজারি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। প্রশাসনও যেন নির্বিকার। দেখেও না দেখার ভান করছে তারা। সাধারণ যাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর মত নেই কেউ।
.
.
কয়েকদিন আগে নেত্রকোনার হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের এক যাত্রী তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন, ট্রেনের দুইজন কর্মচারী নিজেরা টিকেট কিনে নিয়ে ট্রেন ছাড়ার পর সেই টিকেট ব্লাকে বিক্রি করছে। যাত্রীদেরকেও তারা নিজেরাই উঠিয়েছে। আমার সামনে কমপক্ষে ১০-১৫ জনের কাছে টিকিট বিক্রি করেছে। ট্রেনের প্রতিটি বগিতেই এরা সবসময় এই কাজটিই করে। এদের জন্য কাউন্টারে গিয়ে টিকিট পাওয়া যায় না। টিকিটের মূল্য ১৮৫ টাকা হলেও এরা বিক্রি করে ২৫০ টাকায়।
ট্রেনের কর্মচারীদের এই দুর্নীতিতে বিরক্তি প্রকাশ করে ভুক্তভোগীরা বলেন, কাউন্টারে টিকিট ছাড়ার সাথে সাথেই এই কর্মচারীরা সবগুলো টিকেট কিনে নেয়। তারপর বাধ্য হয়ে আমাদেরকে তাদের কাছ থেকে চড়া দামে এসব টিকেট ক্রয় করতে হয়। কখনো কখনো এরা স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়েও দ্বিগুণ টাকা দাবি করে বসে। এদের দৌরাত্ম্য আরো বেশি বেড়ে যায় ঈদ, পূজা, বিভিন্ন ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল সময়ে।
.
.
যাত্রীদের এই অসহায়ত্বে পাশে দাঁড়ানোর মতোও যেন কেউ নেই। রেলওয়ে প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ করেও মিলছে না প্রতিকার। বরং প্রশাসনের আশকারা পেয়েই এসব কর্মচারীদের সাহস বেড়েছে দিনকে দিন। রেলওয়ের টিকিট কালোবাজারির এই দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশাসনের জরুরীভিত্তিতে পদক্ষেপ দাবি করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।