নেত্রকোনা থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ময়মনসিংহ শহরে যাওয়ার উপায় দুইটি – বাস এবং সিএনজি। বাস ভাড়া ৫৫-৬৫ টাকা আর সিএনজি ভাড়া ৮০-১০০ টাকা। (কম বেশিও হতে পারে)। বাসে করে যেতে সময় লাগে ১ ঘন্টা ১০ মিনিট। আর সিএনজিতে করে যেতে সময় লাগে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট এর মতো।
বিপত্তি এই সময়ের হিসেবটাতেই।সবাই শুধু তাড়াতাড়ি যেতে চায় গন্তব্যে। আর তাড়াহুড়োর কবলে পড়ে প্রতিনিয়তই নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘটছে ভয়াবহ সড়ক দূর্ঘটনা। খালি হচ্ছে একের পর এক মায়ের বুক। ঝরে যাচ্ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। এইতো কদিন আগে সিএনজি আর ট্রাকের সংঘর্ষে একসাথে একই পরিবারের ৭ জন মারা গেলো। আর এই লেখাটি লিখা পর্যন্ত গতকালও ৪ জন মারা গেলো। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে এ বছরের এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা আনুমানিক ৭০ এর বেশি। আর আহত কম করে হলেও ৪০০ এর কম হবে না। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।
.
বেশ কিছু দিন আগে বিআরটিসি বাস চলাচল শুরু করলেও কোন এক অজানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। একটা সিন্ডিকেট কত শক্তিশালী হলে, সারা জেলার মানুষকে সর্বোচ্চ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে পারে শুধুই নিজেদের লাভের জন্য। বেশ কয়েকবার লিখেছি, আবারও লিখছি। নেত্রকোনার সর্বসাধারণের কথা চিন্তা করে, নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ রোডে বিআরটিসি বাসগুলো আবার চালু করা হোক। এই রোডে এখন এর থেকে সুন্দর পরিবহণ আর হতে পারে না।
একপ্রকার জোর জবরদস্তি করে বীরদর্পেই চলছে সিএনজিগুলো। অদক্ষ সিএনজি ড্রাইভার, যাদের লাগেনা কোন প্রকার লাইসেন্স। ছোট একটা বাহন, তার মধ্যেই ৬ টা লোক তুলে, তার দুইপাশে দুই জনকে বসিয়ে গাড়ি চালায়। নেই গতিসীমা সম্পর্কে কোন ধারণা। প্রশাসনও এক্ষেত্রে অনেকটাই নিরব ভূমিকা পালন করছে। কেনো তারা এমন করছেন তার কারণও রয়ে গিয়েছে অজানা।
.
জিম্মি আজ প্রিয় নেত্রকোনা। অদক্ষ ড্রাইভার আর দ্রুতগতিতে গন্তব্যে পৌছানোর তাড়াহুড়ায় একপ্রকার নাভিশ্বাস মৃত্যুকুপে পরিণত হয়েছে নেত্রকোনা থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার এই রাস্তাটি। আর এটা নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথাই লক্ষ্য করা যায় না। এটা নিয়ে না আছে তেমন কোন মিডিয়া কভারেজ, না আছে কোন আলোচনা।
.
আমাদের নেত্রকোনাবাসীর আসলে লজ্জা কম।গায়ের চামড়া অনেক বেশি মোটা। আর কত মৃত্যু দেখলে সাধারণ মানুষ সাবধান হবে?
আর কত মানুষ আহত হলে বন্ধ হবে অদক্ষ ড্রাইভারের হাতে তিন চাকার দূর্ঘটনাপ্রবণ যন্ত্রটি? এরকম মারাত্মক একটা বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও আমাদের কি কিছুই করার নেই?
প্রতিনিয়ত চলে যাওয়া মুখগুলো কি আমাদের একটুও জাগিয়ে তুলবে না?
নেত্রকোনা নেত্রকোণা সড়ক দূর্ঘটনা কারণ প্রতিকার বাস সিএনজি সময় আহত নিহত সংঘর্ষ মৃত্যু বিআরটিসি বাস সিন্ডিকেট ড্রাইভার গতিসীমা প্রশাসন নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক গাড়ি যানবাহন শাস্তি ট্রাফিক প্রাণহানি দূর্ঘটনার কারণ নেত্রকোনা সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু নেত্রকোনা সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু