মুখের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায় : প্রিয় পাঠক, মুখের ব্রণ সমস্যায় অনেকেই ভোগে থাকে। এই ব্রণ একজন মানুষের সৌন্দর্য এক নিমিষেই শেষ করে দেয়। বর্তমানে মুখে ব্রণ সমস্যায় পড়ে নাই এমন লোক পাওয়া প্রায় অসম্ভব। এই বিব্রতকর মুখের ব্রণ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন। এই ব্রণ সমস্যা রাতারাতি বা সহজেই দূর করা যায় তার জন্য অনেকেই ন্টে দুনিয়ার ঘাটাঘাটি করেও এর সঠিক সমাধান পায় না। আমাদের ধারাবাহিক আয়োজনের আজকের পর্বে আলোচনা করা হবে কিভাবে দূত সময়ের মাঝে ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ দূর করা যায়।
ব্রণ প্রাধানত একটি কমন চর্ম জাতীয় রোগ। মুখে ব্রণ উঠা মানেই এটি একটি বিব্রতকর ও ঝামেলা। ব্রণ উঠলে একজন মানুষের সৌন্দর্য অনেক খানি ফিকে হয়ে যায়। এটি একটি কমন চর্ম রোগ হওয়ার নিয়মিত মুখের ত্বকে যত্ন নিলেও অনেক সময় ব্রণ সমস্যায় ভোগতে হয়। এই বিব্রতকর ব্রণ একবার মুখে উঠলে এটি মুখ হতে চিরতরে দূর কেরা কঠিন হয়ে যায়। এই ব্রণ সহজেই ও ঘরোয়া উপায়ে মাঝে দূত সময়ে দূর করার জন্য কিছু গোপন টিপস্ দেওয়া হবে।
মুখে ব্রণ উঠার কারণ সমূহঃ-
মানুষের শরীরে সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড নামে এক ধরণে অয়েল বা তেল সরবাহ করা।কোনো কারণে যদি এটি বেশি বেশি অয়েল সরবাহ করে তাহলে তখনি মুখে দেখা দেয় ব্রণ।ত্বকে বেশি সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড অয়েল সরবাহ করার কারণ সমূহ।
১/ বংশগত কারণেঃ– ব্রণ উঠায় অন্যতম কারণ হলো বংশগত কারণ। পরিবারের কারও বিশেষ করে মা-বাবার মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠলে সেটি তার সন্তানেও উঠায় সম্ভবনা থাকে। তাই ব্রণ সমস্যায় অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়ে থাকে বংশগত কারণ।
২/ হরমোনের পরিবর্তনঃ– মুখের ত্বকে ব্রণ উঠে সবচেয়ে বেশি বয়সন্ধিকালে। সাধারণত বয়সন্ধিকালে ছেলে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি হরেমোনের পরিবর্তন হয়ে থাকে। এসময় মানব শরীরের এন্ড্রোজেনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তাই এসময় ব্রণ উঠে থাকে। এছা্ড়াও নারীদের গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে ব্রণ উঠতে পারে।
৩/ লাইফস্টাইলঃ মুখে ব্রণ বিভিন্ন কারণেই উঠতে পারে। তার মাঝে অন্যতম কারণ হচ্ছে মানসিক ভাবে চাপে থাকা দুশ্চিন্তা সহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাম করা বা খারাব খাওয়া। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপের কারণে মুখে ব্রণ উঠে থাকে। রাতে অনেক দেরি করে ঘুমালে বা ঘুম না আসলে মুখে ব্রণ উঠার সম্ভবনা থাকে। এছাড়াও অপরিস্কার ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে ব্রণ উঠতে পারে।
৪/ ক্যামিক্যাল যুক্ত ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারঃ- মুখে ব্রণ উঠায় অন্যতম কারণ হচ্ছে বাজারের নিন্মমানের ক্যামিক্যার যুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা। এইসব মানহিন ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে মুখের ত্বকের মারাত্বক চর্ম রোগ বা তারচেয়ের ভয়ংকর রোগ হতে পারে। আর এসব ক্রিম ব্যবহার করার ফলে মুখে ব্রণ উঠে থাকে।
এছাড়াও মাদক জাতীয় কিছু গ্রহণ করলে তা থেকেও ব্রণ উঠতে পারে।তাই মাদক ও এলকোহল পরিহার করতে হবে।
মুৃখ হতে ব্রণ দূর করার উপায়ঃ=– মুখে ব্রণ এই সমস্যায় অনেকেই ভোগে থাকে। এই ব্রণ দূর করার জন্য অনেকেই ক্যামিক্যাল যুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকে। এগুলো ব্রণ দূর করার চেয়ে মুখের অবস্থা আরও খারাপ করে দিয়ে থাকে। তাই আমাদের মুখের ব্রণ দূর করতে বাজার থেকে ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহার বাদ দিয়ে খুব সহজেই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে। সবগুলো সামগ্রী্রইগানিক,ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক পাওয়া যায় তাই এটি ব্যবহার করা ভালো তেমনি নিরাপদও।
১/ মধুর ফেসপ্যাকঃ- মুখের ব্রণ দূর করতে ঘরোয়াে উপায়ে মুধুর ফেস প্যাক নিয়ে আলোচনা করা হবে। মুখের বা ব্রণের বারতি তরল পদার্থ কমিয়ে এনে এটি সংক্রমণ হতে সাহায্য করে মধুতে থাকা অ্যান্টিসেপ্টিক। একটি পরিষ্কার কাপড়ে কিছুটা মধু লাগিয়ে রেখে মুখে লাগিয়ে রেখে সকালে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি মুখের ব্রণ দূর করতে খুবই কার্যকরী।
এছাড়াও মধুর সাথে বেকিং সোড়া দিয়ে মধুর ফেস প্যাক খুবই কার্যকরী। দুই চামচ মধুর সাথে এক চামচ বেকিং সোড়া মিশ্রণ করে করে তৈরি করে ফেলুন ফেস প্যাক। এই পেষ্টটি ব্রণের উপর লাগিয়ে লাগিয়ে দিন। ৪/৫ মিনিটের মত এগিয়ে রেখে হালকা করে আঙ্গুল দিয়ে ম্যাসাজ করে তুলে ফেলুন এবং হালকা কসুম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন কয়েকবার ব্যবহারে চিরতরে মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে।
মধুর সাথে দারুচিনি বো লেবুর রস মিশ্রণ করে একই অবস্থায় লাগিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে আপনি আরও বেশি উপকৃত হবেন।এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে দূতই ব্রণ দূর হবে।
২/হলুদ ও নিমপাতা মিশ্রণঃ মুখের ব্রণ মানেই মুখের জন্য বাড়তি দুশ্চিন্তা। মুখের ব্রণ বা ব্রণের দাগ করতে সকল পদ্ধতি বিফলে গেলেও কাচা হলুদ ও নিম পাতা মিক্স খুবই কার্যকরী। এক মুঠো নিমপাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে তাতে কয়েক টুকরো কাচা হলুদ নিয়ে তা ব্লেন্ড বা পাটার বেটে নিন। এই পেষ্টটি ২০/২৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি টানা ২/৩ সপ্তাহ ব্যবহার করলে সহজেই ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর হয়ে যাবে।
৩/শসার রস দূর করে ব্রণঃ-শসা ব্রণ সমস্যা দূর করে থাকে। শসাতে ভিটামিন-এ , ভিটামিন-ই, ভিটামিন-ডি থাকে যা মানব ত্বকের জন্য খুবই কার্যকারী। শরীরের তৈলাক্ততা দূর করে শসা। কিছু শসার টুকরো নিয়ে তা থেঁতলে নিন নিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে দিন। এটি ২০ মিনিট পর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও শসা গোল করে কেটে এক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সরাসরি খেতে পারন অথবা সেই পানি দিয়ে মুখমন্ডল ধুয়ে নিতে পারেন। এই সহজ পদ্ধতিতে মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে।
৪/বরফ ব্যবহারে ব্রণ কমেঃ- সাধারনত গ্ল্যান্ডের থেকে অতিরিক্ত তেল বের হওয়ার কারণে ব্রণ উঠে থাকে। বরফ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে ফুসকুড়ি বা ব্রণ দূর করা যায় না। কিন্তু ব্রণের আকার দ্রুত ছোট করে ফেলতে সাহায্য করে ব্রণ। একটা পাতলা কাপড়ে কিছু বরফ কুচি নিয়ে তা মুখের ব্রণ উঠায় স্থান গুলোতে মালিশ করুন। এটি আবার ৫ মিনিট বিরতি দিয়ে আবার একই পদ্ধতিতে ব্যবহার করুন। অবশ্যই এটি দুই বারের বেশি ব্যবহার করবেন না। কারণ ত্বক সংবেদনশীল হলে আইস ম্যাসাজ ব্যাকটেরিয়াল কর্ম বৃদ্ধি করতে পারে।এটি ব্যবহার করার ফলে দ্রত ব্রণ দূর হয়ে যায়। এই বরফ ত্বকে ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
৫/ টুথপেস্ট দিয়ে ব্রন দূরঃ- দাত পরিস্কার করা ব্যবহুত টুথপেস্ট দিয়ে ব্রণ দূর করা যায়। এটি ব্যবহারের কয়েক ণ্টাতেই ফলাফল পাওয়া যায়।
এটি ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখলে ব্রণের ফোলাভাব কমে যায মাত্র কয়েক ঘন্টাতেই।কিন্তু জলে টুথপেস্ট ব্যবহার করা যাবে না।
ব্রণ দূর করার জন্য আমাদের চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।কখনই ব্রণে হাত নিবেন না। ব্রণের রস বের করে ফেললে সেই রস মুখের অন্য জায়গায় লাগলে আরও বেশি ব্রণ উঠার সম্ভবনা থাকে। তাছাড়া আক্রান্ত স্থানে কালো দাগ বা গর্ত হয়ে যেতে পারে।তাই এসব আমাদের পরিহার করতে হবে।ব্রণ হলে অবশ্যই তৈলাত্বক ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করতে হবে।বেশি বেশি পানি খেলে শরীরের বিষাক্ত সব পদার্থ বের হয়ে যায়,ফলে ব্রণ উঠে না বা উঠলেও দূত সেরে উঠে।মুখ আমাদের সৌন্দর্য বহণ করে তাই মুখেই যত্ন নিতে হবে।